
অষ্টম শ্রেণি (Class 8) বিজ্ঞান পঞ্চম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান/ উত্তর
১. পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণ বিভিন্ন হয় কেন ব্যাখ্যা কর
বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণ এর উপর নির্ভর করে। যে সকল কারণে অভিকর্ষজ ত্বরণের পরিবর্তন ঘটে সে সকল কারণে বস্তুর ওজন পরিবর্তিত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণ বিভিন্ন হওয়ার কারণগুলাে ব্যাখ্যা করা হলঃ
পৃথিবীর আকৃতির যেহেতু গােলাকার নয় সেহেতু পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে ভূপৃষ্ঠের সকল স্থানসমূহ দূরে নয়। অভিকর্ষজ ত্বরণের মান পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্বের উপর নির্ভর করে। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান বিভিন্ন হয়।
পৃথিবীর আহ্নিক গতির জন্য অভিকর্ষজ ত্বরণ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় অভিকর্ষজ ত্বরণের মান তত কমতে থাকে। কারণ যতই ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরে ওঠা যায় ততােই বস্তুর ওজন কমতে থাকে। এ কারণে পাহাড় বা পর্বতশীর্ষে বস্তুর ওজন কম হয়।
পৃথিবীর অভ্যন্তরে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন ভূপৃষ্ঠ থেকে যত নিচে যাওয়া যায় অভিকর্ষজ ত্বরণের মান ততই কমতে থাকে। পৃথিবীর অভ্যন্তরে যত গভীরে যাওয়া যায় বস্তুর ওজন ততই কমতে থাকে। এজন্যই পৃথিবীর কেন্দ্রে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান শূন্য হয়।
২. পৃথিবীতে তোমার ভর ৫০ কেজি চাঁদে তোমার ওজন কমে যায় কেন ব্যাখ্যা কর
পৃথিবীতে আমার ভর ৫০ কেজি কিন্তু চাঁদে আমার ওজন কমে যাওয়ার কারণ হলাে ভূপৃষ্ঠ থেকে আমি যত উপরে উঠব অভিকর্ষজ ত্বরণ ততই কমতে থাকবে। ফলে আমার ওজনও কমতে থাকবে। চাঁদের অভিকর্ষজ ত্বরণের মান পৃথিবীর ছয় ভাগের এক ভাগ সুতরাং চাঁদে ১ কেজি ভরের বস্তুর ওজন হবে প্রায় ১.৬৩ নিউটন (N)। পৃথিবীতে আমার ভর ৫০ কেজি কেজি হয় তাহলে চাঁদে আমার ওজন হবে (৫০ x ১.৬৩) = ৮১.৫ নিউটন (N)। চাঁদে আমার ওজন কম হলেও ভর কিছু একই থাকে। কারন মাধ্যাকর্ষণ বল পরিবর্তন
হলে ওজন পরিবর্তন হবে। পৃথিবীর কেন্দ্রে অভিকর্ষজ ত্বরণ শূন্য হয় তাই সেখানে বস্তুর ওজন শূন্য হয়। আর মহাশূন্যে কোন বস্তুর ওজন শূন্য হলে তখন ঐ বস্তুর উপর কোন মহাকর্ষ বল কাজ করে না।
চাঁদে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় বৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করা হয় বলে চাঁদে আমার ত্বরণ শূন্য হয়। যার ফলে চাঁদের পৃষ্ঠে কোন বল প্রয়োগ করতে হয় না। বল প্রয়ােগ না করার ফলে আমার ওজন এর বিপরীতে কোন প্রতিক্রিয়া বল অনুভব করিনা। তাই
আমি ওজনহীনতা অনুভব করি।
৩. একটি চকচকে কাঁচের গ্লাসে কিছু পানি নাও এবার গ্লাসের মধ্যে একটি পাথর ফেলে দাও এবার নিচের কাজগুলো করো
(i) গ্লাসের উপর দিয়ে পাথরটিকে সরাসরি দেখার চেষ্টা করলাম। লক্ষ্য করলাম পাথরটিকে খুব কাছে মনে হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে পাথরটি গ্লাসের তলায় রয়েছে। আসলে এখানে আলোর প্রতিসরণের অবাস্তব প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে গ্লাসের উপর থেকে দেখলে পাথরটিকে পানির খুব কাছে মনে হচ্ছে।
(ii) কিছুটা তির্যকভাবে পাথরটিকে দেখার চেষ্টা করলাম। লক্ষ্য করলাম পাথরটিকে খানিকটা উপরে, দৈর্য্যে কম এবং মােটা মনে হচ্ছে। আসলে আলাের প্রতিসরণের ফলে এমন হচ্ছে। এখানে ঘন মাধ্যমে পানি থেকে আলাে প্রতিসরিত হয়ে হালকা মাধ্যমে আমার চোখে প্রতিফলিত হচ্ছে। যার ফলে পাথরটির নিমজ্জিত অংশের প্রতিটি বিন্দু উপরে উঠে আসে।
(iii) গ্লাসে যে পর্যন্ত পানি আছে তার একটু নিচ থেকে পাথরটিকে দেখার চেষ্টা করলাম। লক্ষ্য করে দেখলাম যে পাথরটিকে বেশ ছোট মনে হচ্ছে। আসলে আলাের প্রতিসরণের কারণে পাথরটিকে ছােট মনে হচ্ছে। বস্তুতপক্ষে পাথরটির আকার ঠিকই আছে।